আত্মনিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর ১০ উপায়

জীবন নিয়ে সালাফদের থেকে চমৎকার একটা কথা আছে। সেটা হলো, জীবন হচ্ছে কিছু দিন আর কিছু রাতের সমষ্টি। একেকটা দিন যাচ্ছে, একেকটা রাত যাচ্ছে আর সাথে করে একটু একটু করে গলে যাচ্ছে আমাদের জীবনের বরফ। মহাকালের রোদ এসে পড়েছে তার গায়ে, প্রতিদিনই বাষ্প হয়ে উড়ে যাচ্ছে তার খানিকটা। 

এই হচ্ছে আমাদের দুনিয়ার জীবনের বাস্তবতা। এই বাস্তবতার কথা যে আমরা জানি না, এমনটা না। আমরা সব জানি, তবুও জেনে জেনেই নিজেদের ধোঁকা দিয়ে যাই। প্রতিনিয়ত, প্রতিক্ষণ। জীবনের এই ক্ষণস্থায়ীত্ব আমাদেরকে আরেকটা অনিবার্য সত্যের দিকে নিয়ে যায় আর তা হলো, জীবনকে কখনো বল্গাহীন ছেড়ে দিতে নেই। অন্তত আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমানের দাবি করে, এমন কেউ নিজের জীবনকে লাগামহীনভাবে চলতে দিতে পারে না। কিন্তু আজকে আমাদের অবস্থা এতোটাই করুণ যে, আমরা একইসাথে ঈমানের দাবি করি আবার লাগামহীন জীবনেও অভ্যস্ত হয়ে থাকি। আফসোস!

কিন্তু আর কতো, বলুন? আত্মনিয়ন্ত্রণের সময় কি এখনো হয়ে ওঠেনি? মানছি আমরা খুবই সাধারণ মানের মানুষ। দুনিয়ার ঘেরাটোপে খুব সহজেই আটকা পড়ে যাই আমরা। নফসের চাহিদা তাড়িয়ে বেড়ায় আমাদের। নফসকে সারাক্ষণ খুশি রাখাকেই জীবন বলে ভেবে নেই আমরা। কিন্তু নফসকে খুশি করতে করতে একটা পর্যায়ে এসে ধরা খেয়ে যাই আমরা। আমরা বুঝি, নিয়ন্ত্রণ দরকার। বহু আগেই দরকার ছিল। 

নিজেদের যেহেতু আমরা মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেই, তাই আসুন ইসলামের জায়গা থেকে এবার কিছু কথা বলা যাক। তার আগে আসুন একবার দু’আ করে নেই, আল্লাহ যেন এই কথাগুলোকে বাস্তবে রূপ দেবার তাওফিক দেন আমাদের। ইসলাম আল্লাহর দ্বীন, এই দ্বীন ছাড়া আর কোনো কিছুই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আল্লাহর দাসত্ব করতে আদিষ্ট, আর কারো বা কোনো কিছুর নয়। আর আল্লাহর দাসত্ব যদি করতে চান, তবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ নেই। আত্মনিয়ন্ত্রণ আমাদের করতেই হবে। বলে রাখা ভালো, ওষুধ হিসেবে এটা তেতো হলেও সুনিশ্চিতভাবেই ফল তার মিষ্টি। আল্লাহ যেন আমাদের এই সুমিষ্ট ফল আস্বাদনের সুযোগ করে দেন। 

এমনকি দুনিয়াবি জায়গা থেকেও ভেবে দেখুন না! আত্মনিয়ন্ত্রণ দুনিয়ার সাফল্য হাসিলের জন্যও অপরিহার্য একটা বিষয়। দুনিয়ার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য হাসিলে যারা উপরের দিকে আছে, তারাও কোনো না কোনো বিষয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রেখেছে। কি দ্বীন, আর কি দুনিয়া—আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিটি ক্ষেত্রেই আবশ্যিক একটা উপাদানের নাম। 

আশা করি, আত্মনিয়ন্ত্রণ কী আর কী-ইবা তার গুরুত্ব, সেটা নিয়ে আর কিছু বলবার দরকার নেই। স্বাভাবিকভাবেই এই পর্যায়ে আপনার মনে প্রশ্ন আসবে যে, সব তো বুঝলাম কিন্তু করবোটা কেমনে? প্রশ্ন সহীহ, কোনো সন্দেহ নেই। ইসলামে আত্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টা যেহেতু একেবারে মৌলিক পর্যায়ে অবস্থান করে, সেহেতু এই বিষয়ে অনেক আলোচনাই সুলভে পাওয়া যায়। আত্মনিয়ন্ত্রণের কার্যকরী উপায় বাতলে দেবার এই পর্যায়ে এসে আমরা চেষ্টা করবো নিজের তরফ থেকে কিছু না বলে ইসলামের ধারক-বাহক আলিমদের কিছু কথা তুলে ধরবার। কেননা, রোগের চিকিৎসা আরেক রোগী থেকে নয়, বরং ডাক্তার থেকেই নেওয়া কর্তব্য। 

মূল আলাপে যাবার আগে আরেকটু ভূমিকা করে নেওয়া দরকার। আজকাল নিজেকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্র অনেকগুলো। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, প্রতিষ্ঠান, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে নিজেকে সামলে চলতে হয়। নিয়ন্ত্রণের লাগাম পরিয়ে রাখতে হয় খায়েশাতের নানান পথ ও পন্থার উপরে। আত্মনিয়ন্ত্রণের উপায় বর্ণনার সময় হয়তো এমন অনেক পয়েন্ট আসতে পারে যেগুলো সবক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, আবার হয়তো কিছু থাকতে পারে এমন যেগুলো ক্ষেত্রবিশেষে প্রযোজ্য। এমনটা যে হবেই, সেটা আমরা জোর দিয়ে বলছি না। তবে হতে পারে এমন। তাই আগেভাগেই সেটা বলে নেওয়া। তবে নিশ্চিত থাকতে পারেন, উপায়গুলো সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য হোক বা না হোক, এরা সবসময়ই একটা আরেকটার সাথে সংযুক্ত থাকবে। একটার সাথে আরেকটার সম্পর্ক থাকবে। চলুন, শুরু করা যাক। 

ইবনুল কাইয়িম রাহিমাহুল্লাহ বলেন :

“আত্মনিয়ন্ত্রণ যতই শক্তিশালী হবে হারামের প্রতি আসক্তি, হারাম কামনা- বাসনা ও নিকষকালো ফিতনার বিরুদ্ধে একজন মুসলিম তত বেশি অটল- অবিচল হবে। অনেকে ইবাদতের ক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ করে। কিন্তু পাপ কাজের মুকাবেলায় তার সে ধৈর্যধারণ থাকে না। আবার এমন অনেক মানুষ আছে, যাদের প্রথমটিতেও সবর নেই, দ্বিতীয়টিতেও নেই। এ ক্ষেত্রে সর্বোত্তম মানুষ হলো সে, যে উভয় প্রকারেই ধৈর্যধারণ করে চলে। উদাহরণত বলা যায়, অনেক মানুষ কি শীত, কি গরম—উভয় সময়েই কষ্ট হলেও কিয়ামুল লাইল আদায় করে, উভয় সময়েই কষ্ট করে সাওম পালন করে। কিন্তু কোনো হারাম থেকে দৃষ্টি সংযত করে না। আবার অনেক মানুষকে দেখা যায়, দৃষ্টি সংযত রাখার ক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ করে। কিন্তু সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ এবং মুনাফিক ও কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার ক্ষেত্রে কষ্ট স্বীকার ও ধৈর্যধারণ করে না।” [উদ্দাতুস সাবিরীন, ১০-১১]

আত্মনিয়ন্ত্রণের উপায় 

১। আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তাওহীদকে দৃঢ় করা : নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা অথবা গুনাহর মধ্যে জড়িয়ে যাওয়ার অনেক কারণ বর্ণনা করা গেলেও একদম গোড়ায় যে কারণটি থাকে সেটি হলো, আল্লাহর প্রতি যথাযথ ঈমান আনতে না পারা। তাওহীদের ভিত্তি দুর্বল থাকা। কারণ হচ্ছে, যে বান্দা আল্লাহর পরিচয় জানবে, তার পক্ষে গুনাহ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। আল্লাহকে চিনতে পারার কারণে গুনাহর মহাস্রোতেও আত্মরক্ষা করা তার জন্য সহজ হয়ে যাবে। যাবতীয় গুনাহর মূলেই হচ্ছে আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞতা। তাওহীদকে দৃঢ় করে গড়ে তোলার মাধ্যমেই নিজের মধ্যে দৃঢ়তা আনা সম্ভব। যে তাওহীদকে আঁকড়ে ধরতে পারবে, তার জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ করাও সহজ হয়ে যাবে।

২। আল্লাহ দেখছেন এই অনুভূতি তাজা করা : সিসিটিভির সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে কেমন ফিল করেন, বলেন তো একটু? সারাক্ষণ একটা সতর্ক ভাব কাজ করে নিজের মধ্যে, তাই না? কারণ আমি জানি কেউ না কেউ আমাকে দেখছে। অথচ আমরা সবাই-ই জানি আল্লাহ আমাকে সবসময় দেখছেন। কিন্তু তাও আমরা গুনাহ করতে ইতস্তত বোধ করি না। আল্লাহ আমাকে দেখছেন—এই অনুভূতিকে তাজা করলে আত্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর একটি উপায় আপনি অর্জন করে ফেলবেন ইনশাআল্লাহ।

৩। গুনাহর ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া : গুনাহ যে আমাদের কি ক্ষতি করে, কীভাবে যে আমাদের ঈমান, আমল, জীবনকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়—সে বিষয়ে বেশি বেশি জানা আর বারবার নিজেকে রিমাইন্ডার দিতে থাকা। গুনাহর ক্ষতি সম্পর্কে যত বেশি আমরা সচেতন হবো, তত বেশি আত্মনিয়ন্ত্রণ করা আমাদের সহজ হবে ইনশাআল্লাহ।

৪। গুনাহর স্থান যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা: যে সমস্ত স্থানে গুনাহ হয়, সেগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা। এতে করে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। গুনাহর স্থানে গেলে অনিচ্ছাসত্ত্বেও গুনাহ হয়ে যায়, নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয় না।

৫। সোশ্যাল সাইট ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন : আত্মনিয়ন্ত্রণের আরেকটি জরুরি বিষয় হলো, সোশ্যাল সাইটগুলো ব্যবহারে লিমিটের মধ্যে থাকা। অহেতুক এসবে ঘুরঘুর না করা। কারণ গুনাহর স্থানে যাওয়া এখন আর লাগে না, বরং গুনাহ এখন নিজ থেকে এসে হাতের মুঠোয় ধরা দেয়। তাই প্রয়োজন সীমিত রেখে সোশ্যাল সাইট ব্যবহার করা এবং প্রয়োজন ছাড়া এগুলো থেকে দূরত্ব অবলম্বন করা। 

৬। সবর ও শোকরের অভ্যাস করা : নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা অবশ্যই খুব কঠিন, যদি না সবর বা ধৈর্যধারণের অভ্যাস না করা হয়। একটা বাস্তবতা আমাদের মনের মধ্যে গেঁথে ফেলা চাই আর তা হচ্ছে, এই পৃথিবীর সবকিছু আমি পাবো না। আমার সব পেতে, সব হাসিল করতে মন চাইবে—সত্য। কিন্তু চাইলেই আমি সব হাসিল করতে পারবো না। পৃথিবী পরীক্ষার জায়গা, এখানে সব পাওয়া যাবে না এটাই স্বাভাবিক। এই অনুভূতিকে ধারণ করে সবরের চর্চা করা। তবে অবশ্যই একইসাথে আল্লাহ আমাকে তাঁর নিজ দয়াগুণে যা যা দিয়েছেন, সেগুলোর জন্য শুকরিয়াও আদায় করা দরকার। আল্লাহ তাঁর অফুরান নিয়ামত দিয়েছেন সবাইকেই। একজনের চেয়ে অন্যজনকে বেশি বা কম দিয়েছেন, কিন্তু প্রত্যেকে নিজের দিকে তাকালে এতো বেশি নিয়ামত দেখতে পাবে যা সে গুণে শেষ করতে পারবে না। তাই যা আছে তা নিয়ে আল্লাহর দরবারে শোকরগুযার হওয়া। সবর ও শোকরের যৌথ প্রচেষ্টা আপনার আত্মনিয়ন্ত্রণের শক্তিকে বাড়িয়ে দেবে বহুগুণে ইনশাআল্লাহ। 

৭। সালাত ও দু’আর মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা : আল্লাহ তা’আলা তাঁর পবিত্র কালামে আমাদের বলে দিয়েছেন সালাতের মাধ্যমে তাঁর কাছে সাহায্য কামনা করতে। আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখনই কোনো সমস্যায় পড়তেন, সাথে সাথে তিনি সালাতে দাঁড়িয়ে যেতেন। একই অভ্যাস ছিল সাহাবায়ে কেরাম ও সালাফুস সালেহীনেরও। তাঁরা সবাই সালাতের মাধ্যমেই আল্লাহর সাহায্য কামনা করতেন। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কখনোই আত্মনিয়ন্ত্রণের যোগ্যতা অর্জন সম্ভব নয়। তাই সালাত ও একনিষ্ঠ দু’আর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার তাওফিক বেশি বেশি করে চাইবো। আমরা চাইবো যেন আল্লাহ আমাদের জন্য এই যোগ্যতা হাসিল করা সহজ করে দেন। তিনি যাতে আমাদের জন্য বিষয়টাকে একদম সহজ করে দেন। 

৮। নফল সিয়াম আদায়ে অভ্যস্ত হওয়া : এই হাদীস সুবিদিত যে, শারীরিক চাহিদা ও কুপ্রবৃত্তিকে দমন করতে সিয়াম পালন করতে বলা হয়েছে। সিয়ামকে বলা হয়েছে ঢালস্বরূপ। সাপ্তাহিক দুই দিন ও মাসিক তিন দিনের নফল সিয়ামে আমাদের সবারই ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া উচিত। আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য সিয়াম অত্যন্ত কার্যকরী একটি মাধ্যম। সিয়ামের মাধ্যমে আত্মার উন্নয়ন ও গুনাহ থেকে বিরত থাকা, দুটো বিষয়ই সহজে সাধন করা যায়। তবে অবশ্যই এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে যে, সিয়াম যেন সত্যিকারের সিয়াম হয়। শুধু যেন খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থেকেই আমরা সেটাকে সিয়াম বলে দাবি না করি। সিয়ামের নামে এরকম উপবাস থেকে কাজের কাজ কিছুই হবে না। 

৯। নেককার মানুষের সঙ্গে থাকা : সোহবত বা সাহচর্য এমন একটি বিষয়, জীবনে যার মূল্য অপরিসীম। বন্ধু নির্বাচনের ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে যেভাবে তাক্বিদ এসেছে, সে থেকেই এর গুরুত্ব স্পষ্ট। মানুষ যার সাথে থাকে, তার চিন্তা ও কাজের মাধ্যমে সে প্রভাবিত হয়। সে যদি নেককার মানুষের সঙ্গ অবলম্বন করে, তবে তার মাঝে নেক আমলের প্রতি আগ্রহ জাগ্রত হয়। তখন তার জন্য নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা ও বেশি বেশি নেক আমল করা সহজ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে, সঙ্গীসাথী যদি গুনাহর কাজে অভ্যস্ত হয় তবে তার নিজের মাঝেও গুনাহ করার প্রবণতা তৈরি হয় এবং গুনাহ করা তার জন্য সহজ হয়ে যায়। তাই এমন সব মানুষদের সাথে থাকুন যাদের সাথে থাকলে দ্বীন নিয়ে কথাবার্তা হয়। দ্বীন নিয়ে শেখা যায়, জানা যায়। যাদের সাথে বসলে অন্তরে শান্তি পাওয়া যায়, অন্তরে নূর সৃষ্টি হয়। যাদের দেখলে আল্লাহর কথা মনে হয়, যাদের দেখলে ভালো হয়ে যেতে খুব ইচ্ছা হয় তাদের সাথেই আপনার সময় কাটান। আপনার অন্তরের সম্পর্ক স্থাপন করুন। সূরা কাহাফের ২৮ নং আয়াতে আল্লাহ স্বয়ং তাঁর রাসূলকে আদেশ দিচ্ছেন এমন মানুষদের সাথে সময় কাটানোর। তবে আমাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কত জরুরি হতে পারে, ভেবে দেখুন। 

১০। রাতের সালাতে গুরুত্ব দেওয়া : সালাত নিয়ে একটা পয়েন্টে আমরা বলেছি। তাহলে আবার আলাদা করে ‘রাতের সালাত’ এর কথা কেন? এর জবাব কুরআন দিয়েই দিচ্ছি আমরা। আল্লাহ আযযা ওয়া জাল কুরআনের ৭৩ নং সূরা মুযযাম্মিলের ৬ নং আয়াতে ইরশাদ করছেন, “নিশ্চয়ই ইবাদাতের জন্য রাতে ওঠা প্রবৃত্তি দমনে সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণে অনুকূল।” গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত সহায়ক একটি মাধ্যম। কুরআনের আয়াত থেকেই এর সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলছে। 

আত্মনিয়ন্ত্রণের কার্যকরী উপায় নিয়ে আল্লাহর তাওফিকে কিছু কথা লেখার চেষ্টা করলাম আমরা। কিন্তু এই ক’টি উপায়ের মধ্যেই সবকিছু, এমনটা ভাবার অবকাশ নেই। তবে আশা করা যায়, যদি আমরা এই ক’টি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখি, আর-রাহমান আমাদের তাঁর অফুরান দয়া থেকে নিরাশ করবেন না। আল্লাহুল মুসতা’আন। 

আত্ননিয়ন্ত্রণ বাড়ানো নিয়ে আরও দিকনির্দেশনা পেতে পড়তে পারেন এই বইগুলো-

আত্মনিয়ন্ত্রন- শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদ
ডোপামিন ডিটক্স- থিবো মেরিস
ঘুরে দাঁড়াও- ওয়ায়েল ইব্রাহিম
চলো পাল্টাই- মুহাম্মাদ আলি
হিলিং দ্য এম্পটিনেস : আত্মিক ও মানসিক সুস্থতা অর্জনের গাইডলাইন- ইয়াসমিন মুজাহিদ

2 Comments

  • Forhad HosSain Foker Posted February 15, 2023 1:34 AM

    মাশাআল্লাহ🌺
    জাযাকাল্লাহ খাইরান♥️
    উত্তম ও এত্ত সুন্দর লেখা🌼😬

  • Jakaria Posted February 27, 2023 12:33 AM

    Ma sha Allah… জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারবো এই দুআ কামনা করি লেখকের কাছে !

Add Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *