ভালো কোরবানির পশু চেনার উপায়

প্রথমত কোরবানির পশু নির্বাচনের ক্ষেত্রে দুটো বিষয় সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যেগুলো ঠিক না হলে কোরবানিই হবে না:
.
👉 বাহ্যিকভাবে ত্রুটিমুক্ত হওয়া
অসুস্থ পশু দিয়ে কোরবানি হবে না। এব্যাপারে একাধিক হাদীস আছে। যেমন: একবার রাসূল সা.-কে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন ধরণের পশু কোরবানী পরিহারযোগ্য। নবীজি বললেন, (চার প্রকারের পশু:) “এক চোখ অন্ধ পশু যার অন্ধত্ব সুস্পষ্ট, খোঁড়া পশু যার পঙ্গুত্ব সুস্পষ্ট, রুগ্ন পশু যার রোগ সুস্পষ্ট, এবং কৃশকায় দুর্বল পশু, যার হাড়ের মজ্জা শুকিয়ে গেছে।” (আবূ দাউদ, ২৮০২; তিরমিযী, ১৪৯৭; নাসাঈ)
.
আলী (রাদ্বি.) বলেন, রাসূল সা. আমাদের আদেশ করেছেন, আমরা যেন চোখ ও কান ভালরূপে দেখে নেই। আর আমরা যেন এমন পশু কোরবানি না করি যা কানা, যার কানের একদিক কাটা, যার কানের গোড়া কাটা এবং ফাঁড়া কান ওয়ালা এবং কান উৎপাটিত। আর ’মুকাবালা’ হল যে পশুর (সামনের দিকে) কানের এক পাশ কাটা, ’মুদাবারা’ হল যে পশুর (পিছনের দিকে) কানের এক পাশ কাটা, ’খারকা’ হল যে পশুর কানে ছিদ্র আছে, ’শারকা’ হল যে পশুর লম্বালম্বিভাবে কান ছেঁড়া। (সুনান আদ-দারেমী, ১৯৯০)
.
এ বিষয়ক সকল হাদীসকে একত্রে করে আলিমগণ বলেন, শারীরিক ত্রুটির কারণে যেসব পশু দিয়ে কোরবানি হবে না:
.
১) খোঁড়া পশু: যে পশু তিন পায়ে চলে, এক পা মাটিতে রাখতে পারে না বা ভর করতে পারে না, বা হাট থেকে বাসা পর্যন্ত হেটে যেতে পারে না।
.
২) রুগ্ণ ও দুর্বল পশু : এমন শুকনো দুর্বল পশু, যা জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না।
.
৩) দাঁত নেই এমন পশু: যে পশুর একটি দাঁতও নেই বা এত বেশি দাঁত পড়ে গেছে যে, ঘাস বা খাদ্য চিবাতে পারে না।
.
৪) পশুর শিং ভেঙে বা ফেটে গেছে: যে পশুর শিং একেবারে গোড়া থেকে ভেঙে গেছে, যে কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পক্ষান্তরে যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু শিং ফেটে বা ভেঙে গেছে বা শিং একেবারে উঠেনি, সে পশু কুরবানি করা জায়েজ।
.
৫) কান বা লেজ কাটা পশু : যে পশুর লেজ বা কোনো কান অর্ধেক বা তারও বেশি কাটা। আর যদি অর্ধেকের বেশি থাকে, তাহলে তার কোরবানি জায়েজ। তবে জন্মগতভাবেই যদি কান ছোট হয়, তাহলে অসুবিধা নেই।
.
৬) অন্ধ পশু : যে পশুর দুটি চোখই অন্ধ বা এক চোখ পুরো নষ্ট, সে পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়।
.
👉 শরীয়ত নির্ধারিত পশুর বয়স
জাবের (রাদ্বি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই মুসিন্না (নির্দিষ্ট বয়সের পশু) কোরবানি করবে। তবে তা তোমাদের জন্য দুষ্কর হলে ছয় মাসের মেষ-শাবক কোরবানি করতে পার’। (সহিহ মুসলিম-১৯৬৩)।
.
আলিমগণ বলেন, পশুর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স:
— উট হলে কমপক্ষে ৫ বছর
— গরু বা মহিষ হলে কমপক্ষে ২ বছর
— ছাগল হলে কমপক্ষে ১ বছর
.
তবে আলিমদের মতে ভেড়া বা দুম্বার ক্ষেত্রে যদি ছয় মাস বয়সেই মোটাতাজায় এক বছরের মতো মনে হয়, তখন তা দিয়েও কোরবানি করা জায়েজ আছে। কিন্তু ছাগল যতই মোটাতাজা হোক, এক বছরের একদিন কম হলেও তা দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না।
.
বয়স চেক করার একটি পদ্ধতি হচ্ছে: নিচের পাটের দুই পাশের ধারালো দাত উঠেছে কিনা তা দেখা।
.
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সুস্থ সবল পশু কোরবানি করার তাওফীক দান করুক।

1 Comment

  • nur Posted June 24, 2023 1:33 PM

    nice

Add Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *