আর কিছুদিন পরেই রোজারদাররা ইতিকাফে বসবেন। জাগতিক সকল ব্যস্ততা ছেড়ে মসজিদে থাকবেন লাইলাতুল কদরের খোঁজে। ১০ দিনের এই সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই পরিকল্পনা করে সময়টা কাজে লাগাতে হবে। কিছু বিষয় মাথায় রাখলে আমাদের ইতিকাফ হতে পারে প্রোডাক্টিভ:
একটা সহজ রুটিন করুন
যেখানে কী কী আমল করবেন তার তালিকা থাকবে। আমলগুলো ওয়াক্ত অনুযায়ী ভাগ করে নিন। অর্থাৎ ফজর, যোহর, আসর, মাগরীব, ইশা—প্রত্যেক ওয়াক্তের আগে পরে কী কী আমল করবেন তার খসড়া রুটিন। তবে খেয়াল রাখবেন, রুটিন যেন খুব কঠিন না হয়। বিশেষ করে এবারের ইতিকাফ যদি আপনার প্রথম ইতিকাফ হয়, তাহলে তো অবশ্যই খুব সহজ করতে হবে।
যে বইগুলো পড়বেন
ইতিকাফে বই পড়তে চাইলে ইসলামী বই নিন। তবে বইয়ের লাইব্রেরি না নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বই নিয়ে বসুন। এমন কিছু বই, যা আপনাকে আমলগুলো তাৎক্ষণিক সুন্দর করবে, রবের প্রতি মনের টান বাড়াবে। ভালো হয় ইতিকাফের পুরোটাই কুরআনের সাথে বেশি সময় কাটালে। বুজুর্গ আলিমগণ ইতিকাফে বসে কুরআনের সাথেই বেশি সময় কাটান।
নো ডিভাইস
সব ধরণের ডিজিটাল ডিভাইস বাসায় রেখে আসুন। একান্ত প্রয়োজনে যদি ফোনে যোগাযোগ করতেই হয়, তাহলে বাটন ফোন সাথে রাখতে পারেন। স্মার্টফোন, ইন্টারনেট, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট—এগুলো থাকলে অভ্যাসবশত অনেক সময় এমনিতেই চলে যাবে।
ছোট টার্গেট, বড় প্রতিদান
ছোট ছোট কিছু টার্গেট নিয়ে ইতিকাফে বসুন। যেহেতু এই দশদিন সম্পূর্ণ আপনি একা থাকছেন, তাই পুরো সময়টা জুড়ে নিজেকে নিয়ে কাজ করুন। ছোট ছোট টার্গেটের মধ্যে থাকতে পারে: কুরআনের শেষ পারার কিছু সূরা মুখস্থ করা, দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় দুআ, যিকর মুখস্থ করা, কম খাওয়া, কম কথা বলা, ইত্যাদি।
আড্ডার সার্কেল এড়িয়ে চলুন
ইতিকাফে অনেকেই দেখবেন ১ দিন যেতেই আড্ডার সার্কেল বানিয়ে ফেলেছে। সেসব সার্কেলে একবার ঢুকে গেলে আপনার আর বাড়তি আমলের ফুরসৎ মিলবে না। তাই শুরু থেকেই সবার সাথে কথা কম বলুন। হাসি ঠাট্টা, জাগতিক কথাবার্তা পরিহারের চেষ্টা করুন।
ভালো খান, ফিট থাকুন
ইতিকাফে হাটাচলা কম হয়। তাই খাবারের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। এমন খাবার পরিহার করবেন যা হজমে সমস্যা হয়, গ্যাস করে, কিংবা ঘুম বাড়িয়ে দেয়। দশদিনের এই সময়টায় যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে আপনারই লস।
সেরাটা দিন
ইতিকাফে বসে থাকাই ইবাদত—এই কথা বলে অনেকেই দেখবেন, আমলের ব্যাপারে উদাসীন হয়ে বসে আছে। শুয়ে বসে কাটাচ্ছে। এগুলো নেকসুরতে শয়তানের ধোঁকা ছাড়া কিছু নয়। আপনি চেষ্টা করুন এই সময়টায় নিজের সেরাটা দিতে। বিশেষ করে আপনি যদি যুবক হন, তাহলে বেজোড় রাত্রীগুলোতে কম ঘুমিয়ে কীভাবে বেশি আমল করা যায়, সেই ফিকির করুন।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে একটি সুন্দর ইতিকাফ করার তাওফীক দিক এবং লাইলাতুল কদর দিয়ে সৌভাগ্যদের অন্তর্ভুক্ত করে নিক।
Leave a Reply