রোযার সুন্নত আদব সমূহ

সিয়াম পালনের কিছু মুস্তাহাব বা সুন্নাত আদব আছে যেগুলো পালন করলে সাওয়াব বেড়ে যাবে। আর তা ছেড়ে দিলে রোযা ভঙ্গ হবে না বা গোনাহও হবে না। তবে পুণ্যে ঘাটতি হবে। কিন্তু তা আদায় করলে সওয়াবের পরিপূর্ণতা আসে। নিম্নে এসব আদব উল্লেখ করা হল:- [১] সাহরী খাওয়া রাসূল ﷺ বলেছেন:- (রোযাদারদের জন্য) সাহরী হল একটি বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরী খাওয়া বাদ দিও না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরী খেয়ে নাও। কেননা সাহরীর খাবার গ্রহণকারীকে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর ফেরেশতারা স্মরণ করে থাকেন। [আহামদ-১০৭০২] . [২] সাহরী দেরী করে খাওয়া অর্থাৎ তা শেষ ওয়াক্তে খাওয়া উত্তম। রাতের শেষাংশে গ্রহণকৃত খাবারকে সাহরী বলা হয়। . [৩] সাহরীর সময়কে ইবাদতে কাজে লাগানো প্রতিরাতের শেষ তৃতীয়াংশ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরশ থেকে প্রথম আসমানে নেমে আসেন। আর বান্দাদেরকে এই বলে আহ্বান করেন : “এখন যে ব্যক্তি আমার কাছে দু‘আ করবে আমি তা কবূল করব, যা কিছু আমার কাছে এখন চাইবে আমি তাকে তা দিব এবং যে আমার কাছে এখন মাফ চাইবে আমি তাকে মাফ করে দিব। [বুখারী-৬৩২১ ও মুসলিম-৭৫৮] . [৪] সূর্য অস্ত যাওয়ামাত্র ইফতার করা রাসূল ﷺ বলেছেন:- মানুষ যতদিন পর্যন্ত তাড়াতাড়ি ইফতার করবে ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে। [বুখারী-১৯৫৭ ও মুসলিম-১০৯৮] . [৫] মাগরিবের সালাতের পূর্বে খেজুর বা পানি দ্বারা ইফতার করা আনাস রাদিআল্লাহু আনহু বলেছেন: রাসূলুল্লাহ ﷺ (মাগরিবের) সলাতের পুর্বে তাজা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। যদি তাজা খেজুর পাওয়া না যেত তবে শুকনো খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। আর যদি শুকনা খেজুর পাওয়া না যেত তাহলে কয়েক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন। [আহমাদ] . [৬] ইফতারের সময় দু‘আ করা রাসূলুল্লাহ ﷺ ইফতারের সময় নিম্নের এ দুআটি পাঠ করতেন::- “পিপাসা নিবারিত হল, শিরা উপশিরা সিক্ত হল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় পুরস্কারও নির্ধারিত হল।” [আবূ দাউদ, দারাকুতনী, বাইহাকী] . [৭] বেশী বেশী কুরআন পাঠ করা, সলাত আদায়, যিকর ও দু‘আ করা রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: সিয়াম ও কুরআন কিয়ামতের দিন (আল্লাহর কাছে) মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে, হে রব! দিনের বেলায় আমি তাকে পানাহার ও যৌন উপভোগ থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবূল কর। কুরআনও বলবে, হে রব! (রাতে কুরআন পাঠের কারণে) রাতের নিদ্রা থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি। তাই এ পাঠকের ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ মঞ্জুর কর। তিনি বলেন, অতঃপর উভয়েরই সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। [আহমাদ-৬৫৮৯] [৮] ইবাদতের তাওফীক কামনা ও আল্লাহর দয়া অনুধাবন করা আমরা যে ইবাদত করি তাও আল্লাহর দয়া। তিনি যে এ কাজে আমাদেরকে তাওফীক দিয়েছেন সেজন্য আমরা তার শুকরিয়া আদায় করি। অনেকের ভাল কাজও আবার কবূল হয় না। আল্লাহ বলেন: “কেবলমাত্র মুত্তাকীদের কাজই আল্লাহ কবূল করেন। [মায়িদাহ : ২৭] . [৯] বেশী বেশী দান খয়রাত করা হাদীসে এসেছে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশী দানশীল আর রমাযানে তাঁর এ দানশীলতা আরো বেড়ে যেত। [মুসলিম-২৩০] . [১০] উত্তম চরিত্র গঠনের অনুশীলন করা রাসূল ﷺ বলেছেন:‘তোমাদের মধ্যে কেউ যদি রোযা রাখে, সে যেন তখন অশ্লীল কাজ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। রোযা রাখা অবস্থায় কেউ যদি তার সাথে গালাগালি ও মারামারি করতে আসে সে যেন বলে, “আমি রোযাদার”। [মুসলিম-১১৫১] . সোর্স: কুরআনের আলো

Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *