আমরা যারা নিয়মিত নামাজ পড়ি, আমাদের সব নামাজ ঠিক থাকলেও ফজরের নামাজের অবস্থা বেহাল দশা। যোহর, আসর, মাগরিব এমনকি এশা নামাজ পড়লেও ফজরে উঠতে বেশ হিমসিম খাই। অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও ঘুম ভাঙ্গে না। এটা আমাদের নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অনেকের তো রমাদান ছাড়া ফজরে উঠাই হয় না। কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করবেন? আসুন, ফজরে জেগে উঠার ৫টি কৌশল জেনে নিই:
১) দ্রুত ঘুমাতে যাওয়া
অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের ফজর মিস হয় রাত জাগার কারণে। রাতে দেরিতে ঘুমাতে গেলে ফজরে উঠতে পারবেন না—এটা খুবই স্বাভাবিক। এতদসত্বেও অনেকে কাজের দোহাই দিয়ে ইচ্ছাকৃত-ভাবে রাত জাগেন। তাই আগে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, আপনি কি সত্যিকার অর্থে ফজরে জেগে উঠতে চান? যদি চান, তাহলে কোনো অজুহাত দেবেন না। মোবাইল থেকে শুরু করে সকল প্রকার ডিভাইস থেকে নিজেকে ঘুমের আগে দূরে রাখুন এবং দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ুন।
২) ঘুমের সাইকেল মাথায় রাখুন
ঘুমের সাইকেলের কথা মাথায় রাখুন। কারও ঘুম দরকার ৮ ঘণ্টা, কারও লাগে ৭ ঘণ্টা, কারও ৬ ঘণ্টা, কারও আবার ৫ ঘণ্টাতেই হয়ে যায়। প্রত্যেক মানুষের ঘুমের ব্যতিক্রম অভ্যাস আছে। আপনার কতক্ষণ ঘুম প্রয়োজন এবং ফজরের নামাজ কয়টায়—এটা হিসেব করে ঘুমাতে যান। ঘুমের সাইকেল ঠিক থাকলে সহজেই ঘুম থেকে উঠা যায়। এমনকি এ্যালার্মেরও প্রয়োজন হয় না।
৩) চালাক এ্যাপ ব্যবহার
আধুনিক এ্যালার্ম সেট করুন। গুগল প্লে স্টোরে এমন অনেক এ্যালার্ম এ্যাপ আছে, যেগুলো একটি মিশন কমপ্লিট না করলে অফ হয় না। যেমন, যোগ বিয়োগ করা, নির্দিষ্ট জিনিসের ছবি তোলা, পাজেল মেলানো, ইত্যাদি। এই কাজগুলো করলেই এ্যালার্ম অফ হবে। এরকম ১টি এ্যাপ ডাউনলোড করে রাখুন এবং এ্যালার্ম হিসেবে ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ Alarmy এ্যাপটি।
৪) সুন্নত পদ্ধতিতে ঘুমাতে যান
সুন্নত পদ্ধতিতে ঘুমাতে যান। যেমন, ঘুমানোর আগে ওজু করে নিন। এরপর বিছানায় গিয়ে ডান কাত হয়ে শুয়ে পড়ুন। অতিরিক্ত নরম বিছানায় শোবেন না, তাহলে অলসতা কাজ করবে। নবীজি (সা.) নরম বিছানায় শোয়া অপছন্দ করতেন।
৫) ঘুমের আগে আমল
ঘুমের আগে কিছু আমল করে নিন। বিশেষ করে সূরা মুলক্, সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, তিন কুল (কুরআনের শেষ তিন সূরা), আয়াতুল কুরসি, সূরা কাফিরূন, সূরা ইসরা ইত্যাদি এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
এছাড়া ফজরে উঠার আরও অনেক কৌশল রয়েছে। এর বিস্তারিত পাবেন ‘ফজর আর করব না কাজা‘ বইতে।
Leave a Reply