ইমাম আবু হানীফা (রহ.) ছিলেন প্রচুর অর্থ কড়ির মালিক। সেযুগের একজন সফল ব্যবসায়ী বললেও অত্যুক্তি হবে না। নিজ হাতে উপার্জন করে, হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁর ব্যবসাটা ছিল মূলত কাপড়ের। কাপড় বিক্রি করেই তিনি পরিবারের ব্যয়ভার বহন করতেন, দুস্থদের দান-সদকা করতেন। ইমাম আবু হানীফা কেমন ব্যবসায়ী ছিলেন, এটা বোঝার জন্য সেই যুগের মানুষদের বক্তব্য শোনা যাক:
উমর ইবনে হাম্মাদ বলেন, ‘আবু হানীফা ছিলেন কাপড় ব্যবসায়ী, আমর ইবনে হুরাইসের বাড়িতে তার দোকানটা প্রসিদ্ধ ছিল।’
আবু নু‘আইম আল-ফদ্বল বলেন, ‘আবু হানীফার কাছে যে-ই সাহায্যের জন্য যেত, তার সাথে তিনি সদ্ব্যবহার করতেন ও বেশ কিছু দিতেন।’
ফুদ্বাইল ইবনে ইয়াদ্ব বলেন, ‘আবু হানীফা প্রচুর সম্পত্তির অধিকারী ছিলেন। তার কাছে যে যেত, তার প্রতি তিনি অনুগ্রহ করতেন।’
বাগদাদে নিজের পণ্য পাঠাতেন ইমাম আবু হানীফা। সেগুলো দিয়ে বিবিধ পণ্য ক্রয় করে কুফায় আনতেন। এরপর এক বছর থেকে আরেক বছর পর্যন্ত যে লাভ হয় তা জমাতেন। আর তা দিয়ে মুহাদ্দিস শাইখদের প্রয়োজন, জীবিকা, পোশাক জোগান দিতেন। অবশিষ্ট লভ্যাংশ তাদের দিয়ে বলতেন, ‘আপনারা নিজ প্রয়োজনে ব্যয় করুন। প্রশংসা কেবল আল্লাহর করবেন। আমি আপনাদের নিজের অর্থ থেকে দিইনি। আল্লাহ আমার প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন, তা থেকেই আপনাদের প্রদান করেছি। এই হলো আপনাদের পণ্যের লভ্যাংশ।’
নিজের পকেট থেকে অর্থ দিয়েও বলছেন, ‘এটা আমার না, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে!’ একজন মানুষ কতটা উদার হলে এরকমটা বলতে পারে! ব্যবসায়িক কাজে এত ব্যস্ত থাকার পরেও একদিন এই মানুষটিই হয়ে উঠেন যুগের সেরা ফকিহ।
যেমন ইমাম শাফেয়ী (রহ.) বলেন, ‘লোকেরা ফিকহের ব্যাপারে আবু হানীফার ওপর নির্ভরশীল।’ তিনি সহ আরও অনেকেই বলেছেন, ‘আমরা আবু হানীফা থেকে বড় ফিকহবিদ দেখিনি।’
ইমাম ইবনুল মুবারক বলতেন, ‘সবচেয়ে ভালো ফিকহ জানেন আবু হানীফা। ফিকহের ক্ষেত্রে তার মতো কাউকে দেখিনি।’
ইমাম যাহাবী বলেন, ‘ফিকহী মত প্রদানের ক্ষেত্রে, সূক্ষ্ম ও জটিলতা বিশ্লেষণে আবু হানীফা সবার ওপরে। লোকে তার ওপর নির্ভরশীল।’
কীভাবে তিনি ব্যবসায়িক ব্যস্ততার পাশাপাশি জ্ঞান গরিমায় এত এগিয়ে গেলেন? কীভাবে একজন সফল ব্যবসায়ীর পাশাপাশি যুগশ্রেষ্ঠ ইমাম হলেন? ইমাম আবু হানীফা সহ বাকি ৩ ইমাম, ইমাম মালেক, ইমাম শাফেই, ইমাম আহমাদ (রহ.)-এর জীবন ও কর্ম জানতে পড়ুন:
বই: ইসলামের চার নক্ষত্র: চার ইমাম
লেখক: ড. সালমান আল-আওদাহ
প্রকাশনী: ওয়াফি পাবলিকেশন
মূল্য: ৩০% ছাড়ে ২৩৫ ৳
Leave a Reply