বিশর ইবনু মানসূর আস-সুলাইমী (রহ.) ১৮০ হিজরির একজন নেককার আলিম। তাঁর বৈশিষ্ট্য ছিল, তিনি খুব লম্বা সময় নিয়ে সালাত আদায় করতেন। কোনো কোনো গ্রন্থে তাঁর ব্যাপারে এটাও পাওয়া যায়, তিনি দৈনিক কয়েক শতাধিক নফল সালাত পড়তেন!
যাইহোক, একদিন তিনি অভ্যাসবশত লম্বা সময় নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। সালাম ফিরিয়ে খেয়াল করলেন এক লোক তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে। সম্ভবত লোকটা তাঁর সালাত দেখে ভাবছে, না জানি কত বড় বুজুর্গ! তাই বিশর নিজেকে বললেন, তাকে কিছু শেখানো দরকার।
তিনি লোকটার কাছে গেলেন। গিয়ে বললেন, ‘আমার সালাত দেখে অবাক হবার কিছু নেই। বরং ইবলিশকে দেখুন, সে কত লম্বা সময় ফেরেশতাদের সাথে আল্লাহর ইবাদতে কাটিয়েছে! (তারপরেও হিদায়াতের ওপর থাকতে পারেনি)!’
নেককার ব্যক্তিদের আখলাকই এমন। তারা কখনও আত্মতৃপ্তিতে ভোগেন না। অন্য মুসলিমদের ব্যাপারে উচ্চ ধারণা রাখলেও নিজেকে অধমই মনে করেন। যেমনটা আমরা ওপরের গল্পে দেখতে পেলাম।
ইবাদতের জন্য সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক বিষয়, আত্মতৃপ্তি। আত্মতৃপ্তি থেকে মনে অহংকার চলে আসে। আর অহংকার সব ধ্বংসের মূল। এজন্য আমাদের পূর্বসূরিগণ আত্মতৃপ্তি থেকে যথাসম্ভব নিজের মনকে পবিত্র রাখতেন।
তৃতীয়ত, তাঁরা সবসময় খ্যাতি থেকে পালিয়ে বেড়াতেন। খ্যাতির কারণ হবে—এমন কিছুই পছন্দ করতেন না। এজন্য সালাফদের অধিকাংশ আমলই হতো গোপন। কেউ দেখে ফেললে তারা ব্যক্তির ধারণা পালটে দিতেন, যাতে তাদেরকে মহৎ না ভাবে।
—————————————————–
গল্পের সূত্র: হিলইয়াতুল আওলিয়া, খণ্ড ৬, পৃঃ ২৩৯
বাংলা রূপায়ন: ওয়াফিলাইফ
পূর্বসূরীদের জীবনী সংক্রান্ত বই নিতে ভিজিট করুন: https://wafi.life/Heroes-Of-Islam
Leave a Reply