রিযক বৃদ্ধির পাঁচটি উপায়

রিযক বৃদ্ধির পাঁচটি উপায়:
.
১) বেশি বেশি ইস্তিগফার করা
রিযক বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম হলো বেশি বেশি ইস্তিগফার করা। যে অত্যধিক ইস্তিগফার করে, আল্লাহ তাআলা তার রিযকে বরকত দান করেন। এমন স্থান থেকে তার রিযকের ব্যবস্থা করে দেন, সে কল্পনাও করতে পারে না।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَقُلۡتُ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ؕ اِنَّہٗ کَانَ غَفَّارًا ﴿ۙ۱۰﴾ یُّرۡسِلِ السَّمَآءَ عَلَیۡکُمۡ مِّدۡرَارًا ﴿ۙ۱۱﴾ وَّ یُمۡدِدۡکُمۡ بِاَمۡوَالٍ وَّ بَنِیۡنَ وَ یَجۡعَلۡ لَّکُمۡ جَنّٰتٍ وَّ یَجۡعَلۡ لَّکُمۡ اَنۡہٰرًا ﴿ؕ۱۲﴾
‘অতঃপর বলেছি, তোমরা তোমাদের রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয় তিনি মহা ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা তোমাদের সমৃদ্ধ করবেন এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন বহু বাগান ও প্রবাহিত করবেন নদী-নালা।’ [সূরা নূহ, ৭১:১০-১২]
.
২) তাকওয়া এবং ঈমান
মানুষের রিযক বৃদ্ধিতে তাকওয়া চমৎকার একটি মাধ্যম। বান্দার ঈমান বৃদ্ধি পেলে তাকওয়াও বৃদ্ধি পায়। আর তখন আল্লাহ তাআলা তাঁর রিযকে সমৃদ্ধি দান করেন। মাধ্যমগুলো তার জন্য সহজ করে দেন এবং খুলে দেন রিযকের বহু অজানা দরজা।
আল্লাহ বলেন,
وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰہَ یَجۡعَلۡ لَّہٗ مَخۡرَجًا ۙ﴿۲﴾ وَّ یَرۡزُقۡہُ مِنۡ حَیۡثُ لَا یَحۡتَسِبُ ؕ
‘আর যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তার নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তিনি তাকে তার ধারণাতীত উৎস হতে রিযক দান করবেন।’ [সূরা ত্বলাক, ৬৫: ২-৩]
.
৩) আল্লাহর প্রতি সুন্দর তাওয়াক্কুল
আল্লাহর প্রতি যে সুন্দরভাবে তাওয়াক্কুল করে, মনের ভিতর আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে রিযক তালাস করে যে, তিনি তার জন্য রিযক সহজ করে দেবেন, আল্লাহ অবশ্যই তাআলা তার জন্য রিযকের ব্যবস্থা করবেন এবং তার জন্য রিযকের দুয়ার উন্মোচন করে দেবেন। প্রভাতে পাখিরা খালি পেটে বের হয়, জানে না কোথায় তাদের রিযক মিলবে। কিন্তু তারাই আবার ভরা পেটে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরে। এভাবে সমুদ্রের বুকে বাস করা মাছেরাও দিবারাত্রি রিযক পাচ্ছে। যে রব তাদের রিযকের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন, সে রব কি আপনার রিযকের ব্যবস্থা করতে পারবেন না? আল্লাহর কাছে আপনার মূল্য তো তাদের চাইতেও বেশি। কাজেই হতাশ না হয়ে আল্লাহর ওপর সুন্দরভাবে তাওয়াক্কুল করুন। তাঁর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে কাজে নেমে পড়ুন।
আল্লাহ বলেন,
وَ مَنۡ یَّتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ فَہُوَ حَسۡبُہٗ
‘আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট।’ [সূরা ত্বলাক, ৬৫: ৩]
.
৪) আত্মীয়তার বন্ধন ঠিক রাখা
আত্মীয়তার বন্ধন ঠিক রাখা বলতে বোঝায়, তাদের সাথে সাক্ষাৎ করা, খোঁজ খবর নেয়া। বাবা-মা, দাদা-দাদী, ভাই-বোন, চাচা-মামা, ফুপু-খালা—রক্তের সম্পর্কের সবাই এর অন্তর্ভুক্ত। রিযকে বরকত পেতে তাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখা বেশ ফলপ্রদ। এছাড়া এতে করে আয়ুতেও বরকত পাওয়া যায়।
আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন,
مَن أحبَّ أن يبسُطَ لَه في رزقِه ، ويُنسَأَ لَه في أثَرِه، فليَصِلْ رَحِمَهُ
‘যে পছন্দ করে তার রিযক প্রসারিত হোক এবং তার আয়ু দীর্ঘ হোক, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।’ [সহীহ মুসলিম, ৬৬৮৮]
.
৫) আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা
আল্লাহর রাস্তায় খরচ করলে রিযকে বরকত আসে। এটা হতে পারে সাধারণ দান-সদকা করা, ইয়াতিমের দায়িত্ব নেয়া, ফরিক মিসকিদের খাওয়ানো, কিংবা তলিবুল ইলমীদের পেছনে খরচ করা, মুজাহিদের সহায়তা করা ইত্যাদি। এর দ্বারা রিযকের বরকত বাড়ে।
اِنَّ الَّذِیۡنَ یَتۡلُوۡنَ کِتٰبَ اللّٰہِ وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اَنۡفَقُوۡا مِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ سِرًّا وَّ عَلَانِیَۃً یَّرۡجُوۡنَ تِجَارَۃً لَّنۡ تَبُوۡرَ ﴿ۙ۲۹﴾ لِیُوَفِّیَہُمۡ اُجُوۡرَہُمۡ وَ یَزِیۡدَہُمۡ مِّنۡ فَضۡلِہٖ ؕ اِنَّہٗ غَفُوۡرٌ شَکُوۡرٌ ﴿۳۰﴾
‘নিশ্চয় যারা আল্লাহর গ্রন্থ পাঠ করে, যথাযথভাবে সালাত আদায় করে, আমি তাদেরকে যে রুযী দিয়েছি তা হতে গোপনে এবং প্রকাশ্যে ব্যয় করে; তারাই আশা করতে পারে এমন ব্যবসার যাতে কখনোই লোকসান হবে না। এ জন্য যে, আল্লাহ তাদেরকে (তাদের কর্মের) পূর্ণ প্রতিদান দেবেন এবং তিনি নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরও বেশী দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।’ [সূরা ফাতির, ৩৫: ২৯-৩০]

Add Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *