ফেরেশতাদের দুআয় শামিল হবার উপায়

ফেরেশতাগণ আল্লাহর খালেস বান্দা, পবিত্র সৃষ্টি। তারা আল্লাহর নির্দেশ মানায় কোনো কার্পণ্য করে না। প্রতিটি নিমেষ আল্লাহর আনুগত্যে কাটায়। এই দিকে কুরআন হাদীসের পাতায় আমরা দেখতে পাই, ফেরেশতাগণ বিশেষ শ্রেণির মানুষদের জন্য দুআ করেন। প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে তাদের দুআয় আমরাও শামিল হতে পারি?
.
আসুন, এরকম ৮টি সময়ের কথা জেনে নিই, যখন আমরা ফেরেশতাদের দুআয় শামিল হতে পারব:
.
(১) দান সদকার সময়
দান সদকার সময় ফেরেশতাগণ ব্যক্তির জন্য দুআ করেন। নবীজি (ﷺ) বলেছেন,
‘প্রত্যহ সকালে বান্দা যখন উঠে, দুজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়। একজন দুআ করে, “ও আল্লাহ, যে দান করে আপনি তাকে দান করুন”, দ্বিতীয় জন বলে, ‘যে (দান হতে হাত) গুঁটিয়ে রাখে, তাকে ধ্বংস করুন।”‘ [সহীহ মুসলিম (২৩৮৩)]
.
(২) মসজিদে সালাতের পর কিছুক্ষণ বসা
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবীজি (ﷺ) বলেন, ‘…সালাত আদায়ের পর ব্যক্তি যতক্ষণ নিজ সালাতের স্থানে থাকে, ফেরেশতাগণ তার জন্য এ বলে দুআ করতে থাকেন, “ও আল্লাহ, আপনি তার ওপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তার প্রতি অনুগ্রহ করুন।”’ [সহীহ বুখারী (৬৪৭)]
.
(৩) মানুষকে উত্তম বিষয় শিক্ষা দেয়া
আবু উমামাহ আল-বাহিলি (রাযি.) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, নবীজির সামনে দুজন ব্যক্তির কথা বলা হলো, যাদের একজন আবেদ, আরেকজন আলেম। (তাদের মাঝে কে উত্তম?) নবীজি বললেন, “তোমাদের সর্বশেষ জনের ওপর আমার যেমন শ্রেষ্ঠত্ব, আবেদের ওপর আলিমের অনুরূপ শ্রেষ্ঠত্ব।” এরপর তিনি বললেন, “আল্লাহ তাআলা, তাঁর ফেরেশতাগণ এবং আসমান ও জমিনের অধিবাসী থেকে শুরু করে, পিঁপড়া থেকে পাথর, (জলের) মাছেরা পর্যন্ত সেই ব্যক্তির জন্য সালাত পেশ করে, যে শিক্ষক মানুষকে উত্তম বিষয় শেখায়।”’ [জামি আত-তিরমিযী (২৬৮৫), মান: হাসান]
.
(৪) অসুস্থকে দেখতে যাওয়া
অসুস্থকে দেখতে যাওয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করার সময় ফেরেশতাগণ দুআ করেন। নবীজি বলেন, ‘যে ব্যক্তি অসুস্থকে দেখতে যায়, কিংবা আল্লাহর জন্য ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে, তখন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন, “তোমার মঙ্গল হোক, তোমার জীবন সুন্দর হোক, জান্নাতের একটি মনজিল তোমার হোক।”’ [তিরমিযী (২১৩৯) মান: গরীব হাদীস]
.
(৫) অন্যের জন্য দুআ করা
নবীজি (ﷺ) বলেন, ‘একজন মুসলিম যখন তার ভাইয়ের অনুপস্থিতে দুআ করে, সেই দুআ কবুল করা হয়। সে সময় তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা অবস্থান করেন। ব্যক্তি যখন তার ভাইয়ের জন্য কল্যাণের দুআ করে, ফেরেশতা বলেন, “আমীন। তোমার জন্যও অনুরূপ”’ [সহীহ মুসলিম (২৭৩৩)]
.
(৬) সেহরি করা
নবীজি বলেন, ‘সেহরি খাওয়ার মাঝে বরকত রয়েছে। তোমরা এটা বর্জন করো না, এক ঢোক পানি হলেও পান করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর ফেরেশতাগণ সেহরি-কারীর জন্য সালাত পেশ করে।’ (অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা তার প্রতি দয়া করেন এবং ফেরেশতাগণ তার জন্য কল্যাণের দুআ করে) [সহীহ আত-তারগীব (১০৭০), শায়খ আলবানী]
.
(৭) প্রথম কাতারে সালাত আদায় করা
নবীজি (ﷺ) বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর ফেরেশতাগণ প্রথম সারীর (সালাত আদায়কারীর) প্রতি সালাত পেশ করেন।’ [সহীহ ইবনু মাজাহ (৮২৩), সহীহ: আলবানী]
.
(৮) কাতার পূরণ করা
নবীজি বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর ফেরেশতাগণ তাদের প্রতি সালাত পেশ করেন, যারা কাতার পুরা করে। আর যে কাতারের ফাঁকা স্থান পূর্ণ করে, আল্লাহ তার মর্যাদা এক স্তর বাড়িয়ে দেবেন।’ [ইবনু মাজাহ (১০৪৮), মান: হাসান]


Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *